২০১৯ সালের মে মাসে আমরা অত্যাধুনিক একটি সাইবার হামলা প্রতিরোধ করেছি যেটি আমাদের ভিডিও কলিং সিস্টেমের অপব্যবহার করেছে, যাতে একাধিক WhatsApp ব্যবহারকারীর মোবাইল ডিভাইসে ম্যালওয়্যার পাঠানো যায়। এই হামলার ধরন অনুসারে নিশানায় থাকা ব্যবহারকারীদের, তাদের কাছে যাওয়া কলের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। লোকজনকে নিরাপদে রাখতে আমরা দ্রুত গতিতে আমাদের সিস্টেমে নতুন সুরক্ষা ব্যবস্থা যোগ করি এবং WhatsApp-এ একটি আপডেট প্রদান করি। এখন পর্যন্ত আমরা যা শিখেছি তার ভিত্তিতে আমরা বর্তমানে অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।

আমরা প্রায় ১,৪০০ জন ব্যবহারকারীর কাছে, যারা এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বলে আমাদের বিশ্বাস একটি বিশেষ WhatsApp মেসেজ পাঠিয়েছি যাতে তাদের সরাসরি জানানো যায় যে কী ঘটেছিল। সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীসহ নাগরিক সমাজের উপর এই হামলার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে আমাদের জানানোর জন্য দ্য সিটিজেন ল্যাব-যেটি টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের Munk School-এর একটি শিক্ষামূলক গবেষণা গ্রুপ, তাদের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা স্বেচ্ছায় আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই নির্দিষ্ট হামলা সম্পর্কে দ্য সিটিজেন ল্যাব এখানে তথ্য প্রকাশ করেছে এবং এই কমিউনিটিকে সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে।

WhatsApp আমাদের ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তাকে অনেক গুরুত্ব দেয়। আপনার কিছু অত্যন্ত ব্যক্তিগত মুহূর্ত WhatsApp-এর মাধ্যমে শেয়ার করা হয়, এজন্য আমাদের অ্যাপে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন তৈরি করেছি। আমাদের অ্যাপের ভিতরে ক্ষতিগ্রস্ত করা যায় এমন কিছু জিনিস এবং অপারেটিং সিস্টেম যার মাধ্যমে আমাদের মোবাইল ফোন চলে তার অপব্যবহার করে, দূষিত ডিভাইসে মেসেজ ডিক্রিপ্ট করার পর সেটি সহজে অ্যাক্সেস করতে এই হামলা করা হয়।

এই ধরনের হামলা প্রতিরোধ করার জন্য আমরা ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনের ইউএন এর বিশেষ দূত David Kaye-এর সুপারিশের সাথে সম্মতি প্রকাশ করি। বিশ্বের যেকোনও লোকজনের প্রাপ্য স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত অধিকার লঙ্ঘনে যাতে এই হামলায় ব্যবহৃত সাইবার হাতিয়ারের মতো উপায় অবলম্বন না করা হয় তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই জোরালো আইনি ব্যবস্থা থাকতে হবে। মানবাধিকার কর্মীর গ্রুপ একটি উদ্বেগজনক ট্রেন্ড নথিবদ্ধ করেছে যে অনুরূপ টুল সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের উপর হামলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণা বিশেষজ্ঞ দ্য সিটিজেন ল্যাব-এর সাথে কাজ করতে গিয়ে আমাদের মনে হয়েছে যে নাগরিক সমাজের অন্তত ১০০ সদস্যকে এই হামলায় নিশানা করা হয়েছিল, যেটি হল অপব্যবহারের একটি নির্ভুল ছক। আরও ভুক্তভোগী সামনে আসার সাথে সাথে সংখ্যাটি বাড়তে পারে। আমাদের ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা প্রদান করতে এবং এই ধরনের বিপদ থেকে নিরাপত্তা দিতে ইন্ডাস্ট্রি পার্টনারদের সাথে কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের সর্বাধিক প্রচেষ্টার ব্যাপারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এছাড়াও WhatsApp একটি অভিযোগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে দায়ের করেছে যাতে এই হামলার জন্য NSO Group এবং এটির মূল সংস্থা Q Cyber Technologies নামে একটি স্পাইওয়্যার কোম্পানিকে দায়ী করা হয়েছে। দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যালিফোর্নিয়ার আইন এবং সর্বোপরি WhatsApp-এর পরিষেবার শর্ত লঙ্ঘন করেছে যার মধ্যে এই ধরনের অপব্যবহার নিষিদ্ধ রয়েছে। এই প্রথম বার কোনও এনক্রিপ্টেড মেসেজ সরবরাহকারী এক বেসরকারি সত্ত্বার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যারা এর ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে এই ধরনের হামলা চালিয়েছে। আমাদের অভিযোগে আমরা ব্যাখ্যা করেছি কীভাবে NSO এই আক্রমণ চালিয়েছে যার মধ্যে রয়েছে NSO-এর একজন কর্মীর স্বীকারোক্তি, যাতে এই হামলার প্রেক্ষাপটে আমাদের পদক্ষেপ কার্যকরী হয়। NSO-কে চিরস্থায়ীভাবে আমাদের পরিষেবার ব্যবহার থেকে নিষিদ্ধ করতে আমরা আদালতের স্থগিতাদেশ চাইছি।

আমাদের প্রকাশিত মতামত সম্পর্কে আপনি এখানে আরও জানতে পারবেন।

আপনি যদি আমাদের কাছ থেকে মেসেজ পেয়ে থাকেন এবং এই ঘটনা সম্পর্কে আরও জানতে চান তাহলে WhatsApp-এর সেটিংস খুলুন, এরপর সাহায্য > যোগাযোগ করুন বিকল্পে গিয়ে সরাসরি এবং নিরাপদে WhatsApp টিমকে মেসেজ পাঠাতে পারেন।